গ্রহাণুকে কক্ষপথ থেকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ার প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখতে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা 'ডার্ট' নামের একটি যান মহাকাশে পাঠিয়েছে।
স্পেসএক্স এর ফ্যালকন ৯ রকেটে চড়ে ডার্ট (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট) ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেজ থেকে বুধবার মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে।
বিবিসি জানায়, অভিযানটি চালানো হবে ডাইমোরফস নামের গ্রহাণুর ওপর। এর ব্যাস ১৬০ মিটার। এই গ্রহাণুটি ডিডিমোস নামের আরেকটি বড় গ্রহাণুকে (৭৮০ মিটার ব্যাস) কেন্দ্র করে ঘুরছে।
কাছাকাছি ঘুরতে থাকা এ দুটি গ্রহাণুই ডার্টের লক্ষ্য। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ভেদ করে ডার্ট সূর্যের চারপাশে এর নিজ কক্ষপথে এগুতে থাকবে ডাইমোরফস এবং ডিডিমোসকে লক্ষ্য করে।
এরপর ২০২২ সালে যুগ্ম কক্ষপথে থাকা ডাইমোরফসে ঘণ্টায় ১৫,০০০ মাইল বেগে আছড়ে পড়বে ডার্ট। এই সংঘর্ষের ফলে গ্রহাণুটির গতিসহ যাত্রাপথ কতটুকু পরিবর্তন করা গেল তা দেখা হবে।
পৃথিবীকে বিপজ্জনক গ্রহাণু থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায় তা জানার উদ্দেশে গ্রহাণুর গতিপথ পরিবর্তনের এমন চেষ্টা এটিই প্রথম।
মহাকাশের কয়েকশ মিটারের এক টুকরো আবর্জনাও যদি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খায় তাহলেও তা একটি মহাদেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনতে পারে।
তাই নাসা এবার ‘ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশান টেস্ট’ (ডার্ট) নামের যে অভিযানে নেমেছে তা সফল হলে এর মাধ্যমে কোনওদিন হয়ত বিপজ্জনক কোনও গ্রহাণু ও পৃথিবীর সংঘর্ষ এড়ানো যাবে এবং মানবজাতি রক্ষা পাবে।
পৃথিবী থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে দশকের পর দশক ধরে ডিডিমোস এবং এর চাঁদ (মুনলেট) ডাইমোরফস নিয়ে গবেষণা চলছে।
নাসা বলছে, ডাইমোরফস কিংবা ডিডিমোস কোনওটিই পৃথিবীর জন্য হুমকি নয়। কিন্তু এ দুটি গ্রহাণুর যে অবস্থান, তাতে এটিই পরীক্ষা চালিয়ে দেখার জন্য মোক্ষম জায়গা যে, একটি মহাকাশ যান দিয়ে কোনও একটি গ্রহাণুকে ধাক্কা দিলে তা গ্রহাণুটির গতিপথ বদলে দিতে পারে কিনা।
এই ধাক্কা বা সংঘর্ষের ফলে ডার্ট ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এই সংঘর্ষের এক সপ্তাহ আগেই ছোট্ট একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে রেখে যাবে ডার্ট। আর সেই স্যাটেলাইটই পাঠাবে সংঘর্ষ-পরবর্তী পরিস্থিতির ছবি।
ওদিকে, ডার্টের ধাক্কায় গ্রহাণু ধ্বংস না হলেও কক্ষপথ থেকে সামান্য বিচ্যুত হতে পারে কিংবা কক্ষপথে প্রদক্ষিণের গতি বদলে যেতে পারে। এই বিচ্যুতি বা গতি কমে যাওয়া খুবই সামান্য হলেও পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা কোনও গ্রহাণু বা আবর্জনাকে সরিয়ে দিতে এই অভিজ্ঞতাই যথেষ্ট কাজে দেবে বিজ্ঞানীদে
Comments
Post a Comment